সোমবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৩

কুলাউড়া ভ্রমণ : পৃত্থিমপাশা জমিদার বাড়ী ও মুরাইছড়া ইকো পার্ক

মুরাইছড়া পার্কে যাওয়ার পথে একটা প্রাকৃতিক দৃশ‌্য
 

২০১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর, দিনটি ছিলো শুক্রবার।

আগেরদিন রাতে হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত নিলাম শুক্রবার সকালে কাধে ব্যাগ নিয়ে দূরে কোথাও ঘুরে আসবো একদিনের জন্য। সারাদিন নিজের মতো করে কাটাবো। এরকম চিন্তা মাথায় প্রায়ই আসে। তবে সেটা বাস্তব হয় খুবই কম। কিন্তু ঐদিন সকালে যেই ভাবা সেই কাজ। কোথায় যাবো সেটা ঠিক না করেই সকাল সাড়ে আটটায় বাসা থেকে বেরিয়ে পরলাম সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের উদ্দেশ্যে! স্টেশনে বসে গুগলে সার্চ দিলাম কাছাকাছি কোথায় বেড়ানোর মত জায়গা আছে। পেয়ে গেলাম কুলাউড়ার পৃত্থিমপাশা নবাব বাড়ির খোঁজ।

 

রেলের কাউন্টারে জিজ্ঞেস করলাম কুলাউড়ার ট্রেন কবে ছাড়বে? বললো দুপুর সাড়ে বারোটা বা একটা বাজবে! তাই ট্রেনের আশা ছেড়ে বাসেই রওনা দিলাম কুলাউড়ার উদ্দেশ্যে। জুম্মার নামাজের সময় গিয়ে পৌছালাম নবাব বাড়িতে। জুম্মার নামাজ পড়লাম নবাব বাড়ির ভিতরে অবস্থিত প্রাচীন মসজিদে।

জমিদার বাড়ীর দীঘির ঘাটে বসলাম কিছুক্ষণ

নামাজের পর মসজিদের সামনের বিশাল বড় দিঘীর চারপাশে ঘুরলাম। দিঘীর তিনদিকে তিনটি পাকা ঘাট আছে। আর আশেপাশে আছে বড় বড় বিভিন্ন ধরণের গাছ। বিভিন্ন ধরণের পাখিরও আনাগোনা ছিলো গাছগুলোতে। আর ঐদিন সারাদিনই কিছুক্ষণ পর পর অল্প অল্প বৃষ্টি হচ্ছিলো। বৃষ্টি আসলে গাছের নিচে দাড়ালেই বৃষ্টি শরীরে লাগতো না। অচেনা এলাকায় নিরিবিলি পরিবেশে হালকা বৃষ্টির মধ্যে বিরাট আকারের নাম না জানা গাছের নিচে দাড়িয়ে পাখির কলরব শুনতে শুনতে পাশের দিঘীতে পরা বৃষ্টির জলের ফোঁটা দেখে অন্যরকম এক অনুভূতি হয়েছিল সেদিন।

 

নবাব বাড়ি ঘুরা শেষে ঘড়িতে দেখলাম বিকাল পৌনে ৩টা। এখনও দিনের ঘন্টার বেশি সময় আছে। তাই আবারও সাহায্য নিলাম গুগল মামার 🙂

 

মুরাইছড়া ইকো পার্ক

পেয়ে গেলাম মুরাইছড়া ইকো পার্কের সন্ধান। আধা ঘণ্টা সময় লাগলো মুরাইছড়া যেতে। সন্ধ্যা পর্যন্ত কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে গান শুনতে শুনতে নিজের মতো করে ঘুরলাম পাহাড় আর চা বাগানের ভেতরের মাটির রাস্তা দিয়ে। যাওয়ার পথে অনেক ক্ষণ হাঁটার পর রাস্তার পাশে একটা টং দোকানের সামনে বেঞ্চে বসে স্থানীয় বাগানের চা পাতা দিয়ে তৈরি চা পান করলাম। আশেপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও চা দুটোই চমৎকার ছিলো। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই ফিরতি পথ ধরলাম সিলেটের উদ্দেশ্যে।

ফেরার পথে কুলাউড়া স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায়

আসার পথে অবশ্য সময় মতো ট্রেন পেয়ে গেলাম। তাই ট্রেন ভ্রমণ করে পরিপূর্ণ হলো সারাদিনের চমৎকার এক ভ্রমণের।

 

কিভাবে যাবেনঃ

সিলেট থেকে ট্রেনে অথবা বাসে যেতে পারেন কুলাউড়ায়।

কুলাউড়া শহর থেকে লোকাল সিএনজিতে করে যাবেন রবির বাজার। সেখান থেকে এক কিলোমিটার পথ হাঁটলেই পেয়ে যাবেন জমিদার বাড়ির দেখা।

রবির বাজার থেকে লোকাল সিএনজিতে করে যাবেন মুরাইছড়া।